এস,এম,হাবিবুল হাসান: সাতক্ষীরায় গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে সদর উপজেলা পরিষদ চত্ত্বরসহ জেলার নিন্মাঞ্চল। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে পৌর শহরসহ জেলার লক্ষ-লক্ষ মানুষ। পানিবন্দি এসব মানুষ জলবদ্ধতার কবল থেকে মুক্তির জন্য আবেদন নিয়ে যে উপজেলা পরিষদে আসবেন সেই সদর উপজেলা পরিষদ চত্ত্বরেও পানিতে নিমজ্জিত। ফলে ভোগান্তির শেষ নেই সদর উপজেলাবাসীর।
বৃহস্পতিবার(২৩ সেপ্টেম্বর) সকালে সরেজমিনে সাতক্ষীরা সদর উপজেলা পরিষদ ঘুরে দেখা গেছে, সমগ্র উপজেলা পরিষদ চত্ত্বর পানিতে থইথই করছে। বৃষ্টির পানি আর নালা-নর্দমার নোংরা পানি মিলেমিশে একাকার হয়ে যাচ্ছেতাই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
উপজেলায় প্রবেশের প্রধান ফটকের পথেই হাঁটু পানি। উপজেলা চত্ত্বরে থাকা প্রায় দুই ডজন সরকারি অফিসে সেবা নিতে আসা সেবাপ্রার্থীরা কোনো রকমে পানি-কাদা মেখে গন্তব্যে পৌঁছাচ্ছেন। কেউ কেউ পোশাক গুটিয়ে জুতা হাতে নিয়ে কোনো রকমে গন্তব্যস্থলে পৌঁছাচ্ছেন। আবার কেউ কেউ উপজেলায় প্রবেশের সামান্য পথটুকু পাড়ি দিতে ভ্যান অথবা অন্য যানবহনের সহযোগিতা নিচ্ছেন। তবে সব থেকে বেশি বিপাকে পড়ছেন নারী-শিশুরা। পুরুষেরা কোনো রকমে পোষাক গুটিয়ে গন্তব্যে পৌঁছালেও নারীরা তা করতে পারছেন না।

ছোট্ট শিশুসন্তানকে টিকা দিতে উপজেলা পরিষদ চত্ত্বরে অবস্থিত আনন্দ টিকাদান কেন্দ্রে এসেছেন পাপিয়া নামের এক গৃহবধূ। উপজেলা পরিষদের প্রবেশপথে এসেই পড়েন বিপদে। সন্তানকে নিয়ে কোন রকমে পানি-কাদা মেখে টিকা কেন্দ্রে পৌঁছালেও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন গণমাধ্যমের কাছে।
তিনি বলেন, বাচ্চাকে টিকা দিতে নিয়ে এসেছি। এসে দেখি উপজেলায় প্রবেশের পথই পানিতে তলিয়ে গেছে। কোনোরকমে ভিজে-পুড়ে রাস্তা অতিক্রম করলাম। টিকাকেন্দ্র পর্যন্ত আসতেই খুব কষ্ট হয়েছে। এখন এই নোংরা পানি মেখে আবার কোনো রোগবালাই হয় কি-না সে চিন্তায় আছি।
সদর উপজেলা পরিষদে জন্মনিবন্ধন ডিজিটাল করতে আসা উত্তম সাহা বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ থেকে কাগজপত্র নিয়ে উপজেলায় এসেছি জন্মনিবন্ধন ডিজিটাল করতে। আগে দু’দিন এসেছি কাজ সম্পন্ন হয়নি, তাই আজ আবার এলাম। এসে অস্বস্তিকর পরিবেশে পড়েছি।
হাঁটু পানিতে পোষাক গুটিয়ে, জুতা হাতে নিয়ে কোন রকমে উপজেলায় পৌঁছালাম। এ সময় তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অবিলম্বে উপজেলা পরিষদ চত্ত্বরের পানি নিষ্কাশনের দাবি জানান।

সাতক্ষীরা সদর উপজেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা ফাতেমা-তুজ-জোহরা উপজেলা চত্ত্বরে পানি জমে থাকার বিষয়ে বলেন, সদর উপজেলা পরিষদের সামনের রাস্তাটা অনেক নিচু এ জন্য টানা বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে। উপজেলার পেছনের রাস্তাটা উঁচু আছে, সবাই ওই পথ দিয়ে আসতে পারছে। সেবা প্রার্থীদের কোনো অসুবিধা হচ্ছে না। তারপরও আমরা সম্মুখ পথের পানিটা পাম্প করে প্রাণ সায়ের খালে ফেলা যায় কি-না চেষ্টা করছি।