ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি : ঠাকুরগাঁওয়ে সালিশের নামে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে চিলারং ইউনিয়নের প্রভাবশালী ইউপি চেয়ারম্যান আইয়ুব আলীর বিরুদ্ধে। স্হানীয় সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে রক্ষকের ভূমিকা পালন না করে, করেছেন ভক্ষকের ভূমিকা, এমন অভিযোগ তুলেছেন ভূক্তভোগী পরিবারের স্বজনেরা ।
বুধবার (৪ আগষ্ট) বাদি-বিবাদী উভয় পক্ষই এমন অভিযোগ তোলেন। স্হানীয় সূত্রে জানা যায় ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার চিলারং ইউনিয়নের রেল ঘুন্টি এলাকার আখানগর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণীর স্কুলপড়ুয়া কিশোরীর সাথে ৬ মাস আগে বিয়ে হয় ওই ইউনিয়নের বাঁশগাড়া গ্রামের ইউনুস আলীর ছেলে আহসান হাবিবের সাথে।
গৃহবধু কিশোরী অভিযোগ করে বলেন আহসান হাবীবের দুলাভাই বদরুল ইসলাম তার শরীরের স্পর্শকাতর জায়গায় হাত দেয় এবং তাকে বেশ কয়েকবার জড়িয়ে ধরে ইর্জত নিতে চায়। বিষয়টি ওই গৃহবধূর স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ি পরিবারকে জানালে তারা কোন পদক্ষেপই নেননি।
গৃহ বধুর স্বামী আহসান হাবীব বলেন গত ঈদুল আযহায় আমার স্ত্রী বাবার বাড়িতে বেড়াতে আসলে পরবর্তীতে শ্বশুর বাড়ি যেতে অস্বীকৃতি জানায়। পরে আমার দুলাভাইকে ফোনে ডেকে নেই। তিনি আসামাত্রই চেয়ারম্যানের পরামর্শে আমাদের আটকিয়ে রাখে এবং মারধর করে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত ২৫ জুলাই ইউপি চেয়ারম্যান ঠাকুরগাঁও পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জমিরুল ইসলামের উপস্থিতিতে ইউনিয়ন পরিষদে সালিশ মীমাংসা করেন, সেখানে আমার দুলাভাইকে ৬০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এবং আমার স্ত্রীকে আমার কাছ থেকে ছাড়িয়ে নিবেন মর্মে চেয়ারম্যান সাহেব সুকৌশলে তার ফুপাত ভাইয়ের কাছে ৭০ হাজার টাকায় নেয়া কনট্রাকি জমির দলিল নিয়ে নেয়। যা মেয়ের পরিবারকে দেয়া হবে বলে জানান।
আহসান হাবিবের পিতা ইউনুস আলী বলেন চেয়ারম্যান সাহেব এভাবে জমির দলিল নেয়াটা ঠিক করেনি। কিশোরীর বাবা অভিযোগ করে বলেন গত সোমবার (২ আগষ্ট ) চেয়ারম্যান সাহেব ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা দেওয়ার কথা কিন্তু তিনি কোন টাকাই দিচ্ছেন না। উল্টো মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে হয়রানি করছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি বলেন বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে ইউনিয়ন পরিষদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ও দায়িত্ব কিন্তু এই বিয়ের ক্ষেত্রে চেয়ারম্যান সরাসরি সম্পৃক্ত ছিলেন। অপরদিকে যৌতুক দেওয়া নেওয়া সমান অপরাধী কিন্তু এই বিয়েতে যৌতুক দেয়া নেওয়ার ক্ষেত্রে তিনি উৎসাহিত করেছেন। অনুসন্ধানেও এর সত্যতা পাওয়া যায়।
ইউপি চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী যৌতুক এবং বাল্যবিবাহের ক্ষেত্রে সহযোগিতার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন স্বাক্ষাতে এসে কথা বললে বুঝতে পারবেন বলে জানান। আইনজীবী মোবারক হোসেন বলেন ধর্ষণের চেষ্টার ঘটনা মিমাংসা যোগ্য নয়। এটা মিমাংসার আওতায় পড়ে না। আইনে আদালতকেও মিমাংসার ক্ষমতা দেয়নি।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোছা: রেজিয়া সুলতানা বলেন বিষয়টি জেনে প্রয়োজনিয় ব্যবস্হা নেয়া হবে জানান তিনি।