স্টাপ রিপোর্টার: মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগরে বিয়ের আগেই সন্তান জন্ম দিয়েছে ১৪ বছরের এক তরুনী। গত ৬ সেপ্টেম্বর সিরাজদিখান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পুত্র সন্তানের জন্ম দেয় ওই তরুনী। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
খোজ নিয়ে জানা যায়, ওই তরুনী নওপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণীর ছাত্রী। সদ্য ভূমিষ্ট নবজাতকের বাবা নওপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর ছাত্র মাহিম মল্লিক বলে দাবী করেন ওই তরুনী। এদিকে সন্তানের স্বীকৃতি না থাকায় ওই তরুনীর মা প্রসবের পরপরই পুত্র সন্তানটিকে বিক্রির চেষ্টা করে বলে অভিযোগ উঠে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শ্রীনগর উপজেলার তন্তর ইউনিয়নের পানিয়া গ্রামের সেলিম মল্লিকের পুত্র ও নওপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর ছাত্র মাহিম মল্লিক প্রায় ৯ মাস আগে প্রতিবেশী একই বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর এক ছাত্রীর গোসলের ভিডিও গোপনে ধারণ করে। পরে ধারনকৃত ওই ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে ওই তরুনীকে অবৈধ সম্পর্কে লিপ্ত হতে বাধ্য করে একাধিক বার শারিরীক সম্পর্ক স্থাপন করে বখাটে মাহিম মল্লিক।
অবৈধ মেলামেশার কারণে এক পর্যায়ে ওই তরুনী সন্তান সম্ভবা হয়ে পড়লে মাহিম মল্লিকের পরিবারের চাপে ওই তরুনীর মা ঘরোয়াভাবে বিষয়টি ধামাচাপা দিয়ে তার মেয়ের গর্ভের সন্তান নষ্ট করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। পরে গত ৬ সেপ্টেম্বর ওই তরুনী সিরাজদিখান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এসে পুত্র সন্তানের জন্ম দেয়। বিয়ের আগেই সন্তান জন্ম দেওয়ার ঘটনাটি এলাকায় জানাজানি হলে মাহিম মল্লিকের পরিবারের চাপে ওই তরুনীসহ ও তার পরিবার আত্মগোপনে চলে যেতে বাধ্য হয়। ওই তরুনীর ফুপা মোঃ ধলু মিয়া জানান, কিশোরীর মায়ের ভুলে এমন হয়েছে। তাদেরকে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য বলেছিলাম। কিন্তু তাতে তারা রাজি হয়নি। তিনি আরো জানান, পিতা জীবিত না থাকায় পরিবারটি অসহায়।
তন্তর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ জাকির হোসেন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ওই কিশোরীর মা আমাকে ঘটনার বিস্তারিত জানিয়েছে। আমি তাদেরকে আইনগত সহায়তা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছি। এ ঘটনার উপযুক্ত বিচার দাবী করে তিনি। সিরাজদিখান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও মো. তাইফুল হক এ বিষয়ে জানান, সন্তান প্রসব করানোর জন্য রোগীর স্বজনরা বাড়িতে চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়ে এখানে নিয়ে আসে।
প্রসূতির মূমুর্ষু অবস্থা দেখে মানবিক কারণ বিবেচনা করে তাকে চিকিৎসা সহায়তা প্রদান করে স্বাভাবিক প্রসব করানো হয়। পুত্র সন্তান জন্মের পরে শরীরে অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দিলে শিশুটিকে ঢাকায় রেফার্ড করা হয়। তবে এব্যাপারে কথা বলার জন্য মাহিমের বাড়িতে গেলে তাদের পরিবারের কাউকে পাওয়া যায়নি। শ্রীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ হেদায়াতুল ইসলাম ভূঞা জানান, এই ঘটনায় কেউ কোন অভিযোগ দায়ের করেননি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে