ইমরান ইসলাম,নিয়ামতপুর(নওগাঁ)প্রতিনিধিঃ নওগাঁর মান্দায় মরিয়ম খাতুন ওরফে মমতা(২৩)নামে এক গৃহবধূকে মারধর ও শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত সোমবার(১৯ জুলাই)দুপুর ১২ টার দিকে মান্দা উপজেলার পরাণপুর ইউনিয়নের পরাণপুর উত্তরপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত গৃহবধূ নিয়ামতপুর উপজেলার ভাবিচা ইউনিয়নের আসনদী গ্রামের মোজাম্মেল হকের মেয়ে ও মান্দা উপজেলার পরাণপুর ইউনিয়নের পরাণপুর উত্তরপাড়া গ্রামের কামেল হাসানের স্ত্রী।
এ ঘটনার পর থেকে এলাকায় থমথমে(শুনশান)পরিবেশ ও মেয়ের শ্বশুর বাড়ির লোকজন পলাতক রয়েছে। এ ঘটনায় মেয়ের বাবা বাদী হয়ে মান্দা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছে। পুলিশ ও এজাহার সূত্রে জানা যায়,পাঁচ বছর আগে কামেল হাসানের সাথে মরিয়ম খাতুনের বিয়ে হয়।
বিয়ের পর থেকে যৌতুকের ৫ লক্ষ টাকার দাবিতে শ্বশুর বাড়ির লোকজন মেয়েকে নির্যাতন করে আসছিলো।মেয়ে নির্যাতন শিকার সহ্য করতে না পেরে ২০১৯ সালে তালাক করেন।এরপর আবার তাদের বিবাহ হয়। বিয়ের পর পূর্বের ন্যায় যৌতুকের ১০ লক্ষ টাকার দাবিতে শুরু হয় মারধর ও শারীরিক নির্যাতন। প্রত্যক্ষদর্শী অমিলা বিবি জানান,আমি বাড়িতে প্রবেশ করে দেখি মেয়েটি ঘরের ভিতরে অচেতন অবস্থায় পড়ে ছিল।
তখন আমি ও মেয়ের স্বামী,শ্বশুর,শাশুড়ী মিলে তাকে চিকিৎসার জন্য অটো ভ্যানে তুলে দেওয়া হয়। পরে শুনলাম মেয়েটি রাস্তায় মারা গেছে। আরেক প্রত্যক্ষদর্শী আবু বকর সিদ্দীক জানান, মেয়েটির চরিত্র ভালো ছিল। যারা তাকে নির্যাতন করে হত্যা করেছে। তাদের আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি মৃত্যুদন্ড দেওয়া হউক। মরিয়মের বাবা মোজাম্মেল হক জানান, হঠাৎ গত সোমবার(১৯ জুলাই) দুপুরে মেয়ে জামাই মুঠো ফোনে মেয়ের মৃত্যুর বিষয়টি জানায়।
যৌতুকের দাবীতে শ্বশুর বাড়ির লোকজন মরিয়মকে মারধর ও শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। মরিয়মের মা জানান,আমার মেয়ের ঠোঁটে ও গলায় আঘাতে চিহ্ন রয়েছিল। স্বামী,শ্বশুর ও শাশুড়ীর নির্যাতনে মারা যায় আমার মেয়ে। দোষীদের আইনের আওতায় এনে যাবতজীবন কারাদন্ড দেওয়ার দাবী জানান তিনি।
মরিয়মের ভাই বুলবুল জানান,বোনের শ্বশুর বাড়ির লোকজন আমাদের ফোন দিয়ে জানায় মরিয়ম অসুস্থ। কিছুক্ষণ পর আবার ফোন দিয়ে জানায় মরিয়ম মারা গেছে। আমরা সেখানে গিয়ে দেখি মরিয়মের লাশটি ঘরের মেঝেতে পড়ে রয়েছে। ঐ পরিবারের লোকজন মিলে আমার বোনকে নির্মম ভাবে হত্যা করেছে তারা মানুষরূপী পশু। আমার বোনের হত্যার বদলে তাদের ফাঁসি চাই।
এ বিষয়ে মান্দা থানার অফিসার ইনর্চাজ(ওসি) শাহীনুর রহমান জানান, এ ঘটনায় মেয়ের বাবা বাদী হয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে। আমরা দুই জনকে আটক করতে সক্ষম হয়েছি। বাকি আসামীরা পলাতক রয়েছে,তাদের আটক করতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।পরবর্তীতে তদন্ত করে রিপোর্ট দাখিল করা হবে।