স্টাফ রিপোর্টার: বগুড়ার শেরপুর উপজেলার একটি বড় অংশ চলতি বর্ষা মৌসুমে বাঙালি নদীর অব্যাহত ভাঙ্গনের কবলে পড়তে পারে। জানা যায়, উপজেলার ঝাঁজর, বিলনোথার, নলডিঙ্গিপাড়া, চক খানপুর, গজারিয়া,বড়ইতলী, চকধলী, চককল্যানী, কল্যানী, আওলাকান্দি, বিনোদপুর, জোরগাছাসহ আরো কয়েকটি এলাকার ফসলি জমি ও বাড়িঘর অনেকটাই বিলীনের পথে প্রায়।

সুঘাট ইউনিয়নের চক কল্যানী গ্রামে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় বন্যার আশংকা দেখা দিয়েছে নদী পাড়ের বসতিদের মাঝে। নদী ভাঙ্গনের কারণে বসতবাড়ি সরানোর কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে তারা। ইতোমধ্যেই কয়েকটি বাড়ি, ইবতেদায়ী মাদ্রাসা ও রাস্তাঘাট বাঙালি নদীগর্ভে বিলিন হয়ে গেছে।
অথচ বাঙালি নদীর কোথাও কোন স্থায়ী বাঁধ নির্মান করা হয়নি। বাঙালি নদীর ভাঙ্গনে সর্বস্ব হারানো চক কল্যানী গ্রামের নজরুল, বক্কার, ছামসুল, মজিদ, মহির উদ্দিন, মফিজ বলেন, আমরা গত ৪ বছর যাবৎ নদী ভাঙ্গনের কবলে পরে বসতবাড়ি হারিয়েছি। এবারো নদী ভাঙ্গনের কবলে পরেছি।
নদী ভাঙ্গনের ফলে আমরা সংসারের ঘাটতি থেকে উঠতে পারছিনা। এতো পরিশ্রম করে চাষাবাদ করেও যদি নদী ভাঙ্গনের কারণে ঘাটতি থেকে না উঠতে পারি তাহলে কিভাবে আমরা চলবো। আমাদের বসতবাড়ি ও গ্রামগুলো রক্ষার জন্য সরকারের কাছে স্থায়ী বাঁধ নির্মানের দাবি জানাচ্ছি।
বাঙালি এবং করতোয়া নদীর তীর সংরক্ষণের টেন্ডার হয়েছে বেশ কিছুদিন আগে তার পরও শুরু হয়নি কাজ।
বগুড়ার শেরপুরে আজও শুরু হয়নি বাঙালী নদীর তীর সংরক্ষণের কাজ। ফলে বাঙালী নদীর অব্যাহত ভাঙনে বিস্তৃর্ণ এলাকা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে। অপরদিকে এক শ্রেণীর মুনাফালোভী বালু ব্যবসায়ীরা শ্যালো মেশিন দিয়ে বালু তোলার কাজ অব্যাহত রেখেছে। এতে করে নদীকুলীয় মানুষগুলো বাড়ি-ঘর হারানোর আশংকায় দিনাতিপাত করছেন।
বিষয়টি প্রশাসনের গোচরে দেওয়া হলে যদিও তারা প্রায়ই ভ্রাম্যমাণ আদালতে বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করেন তবুও বেপরোয়া তারা। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বগুড়ার সোনাতলা, সারিয়াকান্দি, ধুনট ও শেরপুর উপজেলার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া বাঙালী নদীর ১৯ কিলোমিটার এলাকায় ২২টি লটে নদীর তীর সংরক্ষণ কাজ করা হবে।
এছাড়াও সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে ওই নদী খনন করা হবে বলে জানা গেছে। এজন্য সরকারের ব্যয় হবে ৩২০ কোটি টাকা। এ কাজের জন্য বরাদ্দ পাওয়া গেছে মাত্র ১৫ কোটি টাকা।
ইতিমধ্যেই বগুড়ার ঐ ৪ উপজেলায় নদীর তীর সংরক্ষণের জন্য সিসি ব্লক নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে।
এখনো পর্যন্ত শেরপুর উপজেলায় নদী খননের কাজ শুরু হয়নি বলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে। এদিকে বাঙালী নদীর অব্যাহত ভাঙনে চলতি বর্ষা মৌসুমে শেরপুর উপজেলার বিস্তৃর্ণ এলাকা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে।
এ বিষয়ে বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ মাহবুবুর রহমান জানান, বগুড়ার অংশে ১৯ কিলোমিটার বাঙালী নদী ভাঙনরোধে তীর সংরক্ষণ ও নদী খননের কাজ বগুড়ার ধুনট উপজেলা থেকে শুরু হয়েছে।
নদী খননের কাজ হবে আগে। সেনাবাহিনী নদী খননের কাজ তদারকি করবেন। নদীর তীর সংরক্ষণের কাজের জন্য ঠিকাদার নিযুক্ত করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদাররা সিসি ব্লক তৈরির কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। বন্যার পানি নেমে গেলেই খননকাজ বা তীর সংরক্ষণ কাজ শুরু হবে।