27 C
Bangladesh
Saturday, September 23, 2023
Google search engine

সর্বশেষ পোস্ট

বগুড়া জামালপুর আগামীকাল ১২ আগস্ট থেকে যমুনা নদী শুরু হচ্ছে ফেরি চলাচল

স্টাফ রিপোর্টার : দীর্ঘদিনের অপেক্ষার প্রহরের অবসান হচ্ছে। আগামীকাল ১২ আগস্ট বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হচ্ছে বগুড়া-জামালপুর নৌপথে ফেরি চলাচল। এই ফেরি সার্ভিসের শুভ উদ্বোধন করবেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সংসদ সদস্য মির্জা আজমসহ নেতৃবৃন্দ। দীর্ঘ প্রতীক্ষিত ফেরিঘাট চালুর সংবাদে খুশি যমুনা নদীর দুই প্রান্তের লাখো মানুষ। ফেরি চলাচল শুরুর মধ্য দিয়ে ফের ব্যবসা-বাণিজ্যসহ অন্যান্য বিষয়ের উন্নয়ন হবে। ইতোমধ্যে জামথল ঘাটে সি-ট্রাক(ফেরি) এসে পৌঁছেছে।

তবে ফেরি চালু হলে এ অঞ্চলের মানুষের উৎপাদিত কৃষিপণ্যসহ অন্যান্য পণ্য স্বল্প সময় ও খরচে রাজধানীঢাকা সহ আশপাশের জেলায় নিতে পারবেন। বঙ্গবন্ধু সেতুপথে যেতে না হওয়ায় রাজধানীর সঙ্গে প্রায় ৮০ কিলোমিটার পথ কমবে। ফেরি চলাচলের সংবাদে দুই পাড়ের মানুষদের মাঝে আনন্দ বইছে।

স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা যায়, ১৯১২ সালে ব্রিটিশ শাসনামলে জামালপুরের দেওয়াগঞ্জের বাহাদুরাবাদ রেলঘাট চালু হয়। একসময় উত্তরবঙ্গের সঙ্গে রাজধানীর যোগাযোগের ব্যবস্থা ছিল ফেরিনির্ভর। তখন মানুষ নৌকায় করে মালপত্র নিয়ে ট্রেনে যাতায়াত করতো ঢাকায়। তিস্তামুখ-বাহাদুরাবাদ নৌপথে ১৯৩৮ সালে ‘বাহাদুরাবাদ রেল ফেরিঘাট’ চালু হয়। এই পথে ঢাকা, চট্টগ্রাম এবং বৃহত্তর ময়মনসিংহের জামালপুর, শেরপুর, নেত্রকোনা ও কিশোরগঞ্জের সঙ্গে উত্তরাঞ্চলের বৃহত্তর রংপুর, দিনাজপুর, রাজশাহী ও বগুড়া জেলা থেকে যাত্রী ও মালপত্র নিয়ে পারাপার হওয়া যেত। ঘাটে বড় বড় জাহাজ, লঞ্চ, স্টিমার ভিড়তো। ফেরির লাইনের সংখ্যা ১৩টি ছিল।

বাহাদুরাবাদ রেল ফেরিঘাট থেকে যাত্রীবাহী ট্রেন ও মালবাহী ওয়াগন চলাচল করত রাজধানী ঢাকাসহ দক্ষিণাঞ্চলে। সে সময় উত্তরাঞ্চলের মানুষের দক্ষিণাঞ্চলের যাতায়াত প্রধান মাধ্যম ছিল ফেরি সার্ভিস। এভাবে চলতে থাকার পর ১৯৮৮ সালে ভয়াবহ বন্যায় যমুনা নদীর গতি পরিবর্তন হয়ে যায়। নদী পথ পরিবর্তন হয়ে লোকালয়ের দিকে ভাঙ্গতে থাকে। লোকালয়ে ভাঙ্গনের ফলে নদীতে পলি পড়ে নাব্যতা সংকট দেখা দেয়। নাব্যতা সংকটে ফেরি সার্ভিসটি তিস্তামুখ ঘাট থেকে বালাসী ঘাটে স্থানান্তর করা হয়। বঙ্গবন্ধু সেতু নির্মাণের আগে দিনাজপুর থেকে রংপুর হয়ে গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার বালাসীঘাট পর্যন্ত ট্রেন চলাচল অব্যাহত ছিল। বগুড়ার সান্তাহার থেকে বোনারপাড়া হয়েও ট্রেনের যাত্রীরা এই ঘাট হয়ে চলাচল করত। ১৯৯৮ সালের জুন মাসে বঙ্গবন্ধু সেতু চালুর পর প্রথমে যাত্রীবাহী ট্রেন ও পরে মালবাহী ওয়াগন পারাপার বন্ধ হয়ে যায়।

বগুড়ার সারিয়াকান্দি থেকে জামালপুরের মাদারগঞ্জ নৌঘাটের দূরত্ব মাত্র ১৬ কিলোমিটার। অথচ সড়কপথে মাদারগঞ্জ যেতে হলে সারিয়াকান্দি থেকে ২০ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে জেলা শহর বগুড়ায় যেতে হবে। বগুড়া হতে সড়কপথে সিরাজগঞ্জ হয়ে বঙ্গবন্ধু সেতু হয়ে টাঙ্গাইল জেলা হয়ে জামালপুর যেতে হবে। এরপর থেকেই যমুনার এক পারে বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার কালীতলা ও মথুরাপাড়া নৌঘাট এবং অন্য পারে জামালপুরের মাদারগঞ্জ, দেওয়ানগঞ্জ ও কাজলাঘাটে নৌকা দিয়েই উত্তরাঞ্চলের হাজারো মানুষ প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করে আসছে। পোহাতে হচ্ছে নানা ধরনের দুর্ভোগ। এতে চলাচলকারীদের একদিকে সময় বেশি অপচয় হচ্ছে, অপরদিকে দিতে হচ্ছে অধিক ভাড়া।

অথচ বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার যমুনা নদীতে ফেরীঘাট স্থাপন হলে উত্তরের মানুষের সাথে আবারো বৃহত্তর ময়মনসিংহ জেলার যোগাযোগ স্থাপন হবে। পথ কমে যাওয়ার পাশাপাশি নতুন করে প্রসার হবে কৃষি পণ্যের দ্রæত সরবরাহ, ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসার এবং সড়ক মহাসড়কে যানজট কমে আসবে। ফেরি ঘাট স্থাপনের দ্রæত বাস্তবায়নের দাবী জানিয়ে আসছিল যমুনা নদীর দুই পাড়ের মানুষ।

বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, যমুনা নদীর দু’পাড়ের মানুষের যাত্রা স্বাভাবিক করতে দীর্ঘদিন ঝুলে থাকা মাদারগঞ্জ-সারিয়াকান্দি নৌ রুটটি চালুর বিষয়ে রুটে স¤প্রতি উদ্যোগ নেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম। গত ২৬ মে ফেরি সার্ভিস চালু করতে ফেরিঘাট নির্মাণ, সড়ক যোগাযোগ স্থাপন, নাব্য ফেরাতে নদী খননসহ নদী সংস্কার ও উন্নয়নে প্রকল্প গ্রহণের প্রাক-সম্ভবতা যাচাইয়ে একটি কারিগর বিশেষজ্ঞ দল জামালপুরের মাদারগঞ্জ ও বগুড়ার সারিয়াকান্দি এলাকা পরিদর্শন করেন।

জাতীয় গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইনস্টিটিউট অব ওয়াটার মডেলিংয়ের (আইডবিøউএম) পরামর্শক মো. মহিউদ্দীন পাটোয়ারি নেতৃত্বে দুই সদস্যের প্রতিনিধি দল ফেরি চালুর সামাজিক ও অর্থনৈতিক সম্ভাব্যতা যাচাই করেছেন। সরকারের পানি ব্যবস্থাপনা প্রকল্পে পরিকল্পনা ও প্রযুক্তি সহায়তাকারী সরকারি জাতীয় গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইনস্টিটিউট অব ওয়াটার মডেলিংয়ের দুই সদস্যের প্রতিনিধি দল প্রকল্পের গুরুত্ব বিবেচনা ও নানাদিক পর্যবেক্ষণের পাশাপাশি এ রুটে ফেরি সার্ভিস চালুর জন্য কারিগরি দিক বিবেচনা করে সুপারিশসহ প্রতিবেদন সংশ্লিষ্ট দফতরে জমা দেন। এরপর বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহণ কর্তৃপক্ষ (বিআইডবিøউটিএ) ও পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় বগুড়া-জামালপুরের যমুনার ১৬ কিলোমিটার রুটে ফেরি সার্ভিস চালুর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়।

তবে বগুড়ার সারিয়াকান্দি খেয়াঘাট থেকে জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলার জামথল রুটে সি-ট্রাক চালু হলে ২-৩ ঘণ্টা সময় সাশ্রয় হবে। এ রুটে এক ঘণ্টার চলাচলকারী চলাচলকারী সি-ট্রাকে ২০০ যাত্রী, ২-৩টি প্রাইভেট গাড়ি, ১৫টি মোটরসাইকেল পারাপার করা সম্ভব। আর এ ফেরিতে যাতায়াতে জনপ্রতি ১০০ টাকা গুনতে হবে।

এ প্রসঙ্গে বগুড়ার সারিয়াকান্দি পৌরসভার মেয়র মতিউর রহমান মতি বলেন, এই পথে ফেরি চালু হলে উত্তরাঞ্চলের মানুষ বৃহত্তর ময়মনসিংহ ছাড়াও রাজধানী ঢাকায় বাসে কম সময়ে যাতায়াত করতে পারবেন। পাশাপাশি যমুনা সেতুর ওপর চাপ কমবে। ফেরি চালু হলে যাত্রীদের দুর্ভোগ লাঘব হবে অনেকটাই।

এ বিষয়ে বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মুনজিল আলী সরকার বলেন, সারিয়াকান্দি মাদারগঞ্জ ফেরি চলাচল আমাদের দীর্ঘ দিনের প্রাণের দাবি। উভয় পার্শ্বের ঘাটে প্রায় তিন শতাধিক মোটরসাইকেল আরোহী পরিবহন কাজে নিয়োজিত রয়েছে। ফেরি চলাচল হলে কর্মহীন অনেকের কর্মের ব্যবস্থা হবে। কর্মের সন্ধানের এপাড়ের মানুষ খুব সহজে ওপারে যেতে পারবে।

বগুড়া-১ আসনের সংসদ সদস্য সাহাদারা মান্নান বলেন, প্রয়াত সাংসদ কৃষিবিদ আব্দুল মান্নানের স্বপ্ন ছিল, এই এলাকার সাবেক সংসদ সদস্য মরহুম আব্দুল মান্নানও ফেরি সার্ভিস চালুর চেষ্টা করে এলাকার মানুষের দীর্ঘদিন ধরে এই দাবি জানিয়ে আসছিল। সারিয়াকান্দিতে ফেরি সার্ভিস চালু হলে ঢাকার সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থার অনেক পরিবর্তন হবে। বৃহত্তর ময়মনসিংহের সঙ্গে এ অঞ্চলের মানুষের ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে। তাছাড়া ফেরি চলাচলের সিদ্ধান্তে অপেক্ষার যেন তর সইছে যমুনার দু’পাড়ের মানুষদের।

লেটেস্ট পোষ্ট

ফেয়ার & লেডি

spot_img

অবশ্যই পড়ুন

[tdn_block_newsletter_subscribe title_text="Stay in touch" description="VG8gYmUgdXBkYXRlZCB3aXRoIGFsbCB0aGUgbGF0ZXN0IG5ld3MsIG9mZmVycyBhbmQgc3BlY2lhbCBhbm5vdW5jZW1lbnRzLg==" input_placeholder="Email address" tds_newsletter2-image="5" tds_newsletter2-image_bg_color="#c3ecff" tds_newsletter3-input_bar_display="row" tds_newsletter4-image="6" tds_newsletter4-image_bg_color="#fffbcf" tds_newsletter4-btn_bg_color="#f3b700" tds_newsletter4-check_accent="#f3b700" tds_newsletter5-tdicon="tdc-font-fa tdc-font-fa-envelope-o" tds_newsletter5-btn_bg_color="#000000" tds_newsletter5-btn_bg_color_hover="#4db2ec" tds_newsletter5-check_accent="#000000" tds_newsletter6-input_bar_display="row" tds_newsletter6-btn_bg_color="#da1414" tds_newsletter6-check_accent="#da1414" tds_newsletter7-image="7" tds_newsletter7-btn_bg_color="#1c69ad" tds_newsletter7-check_accent="#1c69ad" tds_newsletter7-f_title_font_size="20" tds_newsletter7-f_title_font_line_height="28px" tds_newsletter8-input_bar_display="row" tds_newsletter8-btn_bg_color="#00649e" tds_newsletter8-btn_bg_color_hover="#21709e" tds_newsletter8-check_accent="#00649e" embedded_form_code="JTNDIS0tJTIwQmVnaW4lMjBNYWlsQ2hpbXAlMjBTaWdudXAlMjBGb3JtJTIwLS0lM0UlMEElMEElM0Nmb3JtJTIwYWN0aW9uJTNEJTIyaHR0cHMlM0ElMkYlMkZ0YWdkaXYudXMxNi5saXN0LW1hbmFnZS5jb20lMkZzdWJzY3JpYmUlMkZwb3N0JTNGdSUzRDZlYmQzMWU5NGNjYzVhZGRkYmZhZGFhNTUlMjZhbXAlM0JpZCUzRGVkODQwMzZmNGMlMjIlMjBtZXRob2QlM0QlMjJwb3N0JTIyJTIwaWQlM0QlMjJtYy1lbWJlZGRlZC1zdWJzY3JpYmUtZm9ybSUyMiUyMG5hbWUlM0QlMjJtYy1lbWJlZGRlZC1zdWJzY3JpYmUtZm9ybSUyMiUyMGNsYXNzJTNEJTIydmFsaWRhdGUlMjIlMjB0YXJnZXQlM0QlMjJfYmxhbmslMjIlMjBub3ZhbGlkYXRlJTNFJTNDJTJGZm9ybSUzRSUwQSUwQSUzQyEtLUVuZCUyMG1jX2VtYmVkX3NpZ251cC0tJTNF" descr_space="eyJhbGwiOiIxNSIsImxhbmRzY2FwZSI6IjE1In0=" tds_newsletter="tds_newsletter3" tds_newsletter3-all_border_width="0" btn_text="Sign up" tds_newsletter3-btn_bg_color="#ea1717" tds_newsletter3-btn_bg_color_hover="#000000" tds_newsletter3-btn_border_size="0" tdc_css="eyJhbGwiOnsibWFyZ2luLWJvdHRvbSI6IjAiLCJiYWNrZ3JvdW5kLWNvbG9yIjoiI2E3ZTBlNSIsImRpc3BsYXkiOiIifSwicG9ydHJhaXQiOnsiZGlzcGxheSI6IiJ9LCJwb3J0cmFpdF9tYXhfd2lkdGgiOjEwMTgsInBvcnRyYWl0X21pbl93aWR0aCI6NzY4fQ==" tds_newsletter3-input_border_size="0" tds_newsletter3-f_title_font_family="445" tds_newsletter3-f_title_font_transform="uppercase" tds_newsletter3-f_descr_font_family="394" tds_newsletter3-f_descr_font_size="eyJhbGwiOiIxMiIsInBvcnRyYWl0IjoiMTEifQ==" tds_newsletter3-f_descr_font_line_height="eyJhbGwiOiIxLjYiLCJwb3J0cmFpdCI6IjEuNCJ9" tds_newsletter3-title_color="#000000" tds_newsletter3-description_color="#000000" tds_newsletter3-f_title_font_weight="600" tds_newsletter3-f_title_font_size="eyJhbGwiOiIyMCIsImxhbmRzY2FwZSI6IjE4IiwicG9ydHJhaXQiOiIxNiJ9" tds_newsletter3-f_input_font_family="394" tds_newsletter3-f_btn_font_family="" tds_newsletter3-f_btn_font_transform="uppercase" tds_newsletter3-f_title_font_line_height="1" title_space="eyJsYW5kc2NhcGUiOiIxMCJ9"]
x