হেলাল উদ্দিন সরকার, ধুনট বগুড়া থেকে: বগুড়া জেলার ধুনট উপজেলায় কালোবাজারে বিক্রিকালে সরকারের খাদ্য বান্ধব কর্মসূচীর ১২০ বস্তা চাল জব্দ করেছে পুলিশ। এসব চাল দুস্থদের মাঝে ১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করার কথা ছিল। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে দুই ব্যক্তিকে আটক করা হয়।
আটক হওয়া ব্যক্তিরা হলেন, উপজেলার চৌকিবাড়ি গ্রামের মোসলেম উদ্দিনের ছেলে আরিফ হোসেন (৪৪) ও কালাম মন্ডলের ছেলে মঞ্জু মন্ডল (৪২)। মঙ্গলবার দুপুরের পর ধুনট থানা থেকে তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে বগুড়া জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
থানা পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় সরকারের খাদ্য বান্ধব কর্মসূচীর চাল বিক্রির জন্য ১০ টি ইউনিয়নে ২০ জন ডিলার রয়েছেন। কার্ডধারী দুস্থ ব্যক্তিরা ডিলারদের কাছ থেকে ১০ টাকা কেজি দরে চাল কেনেন। প্রতি মাসে একজন কার্ডধারী ৩০ কেজি করে বছরে ৫ মাস এ চাল কিনতে পারেন। চৌকিবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ফরহাদ হোসেনের স্ত্রীর নামে খাদ্য বান্ধব কর্মসূচীর ডিলারশীপ রয়েছে। স্ত্রী অসুস্থ্য থাকায় ফরহাদ হোসেন দিঘলকান্দি বাজার থেকে ডিলারী কার্যক্রম পরিচালনা করেন।
সরকারি স্বল্পমূল্যে দুস্থদের কাছে বিক্রির এসব চাল কালোবাজারে বিক্রি হচ্ছে এমন অভিযোগ পেয়ে সোমবার রাতে অভিযানে নামে ধুনট থানার চৌকস পুলিশদ্বয়। সুপরিকল্পিত অভিযানকালে উপজেলার চৌকিবাড়ি গ্রামে পাকা রাস্তার উপর থেকে অত্যান্ত সুকৌশলে একটি স্যালোমেসিনের ইঞ্জিন চালিত ভটভটি আটক করে ধুনট থানার বিচক্ষণ পুলিশ।
এসময় ওই ভটভটিতে বোঝাই করে রাখা ১২০ বস্তা (৩৬০০ কেজি) সরকারি খাদ্য বান্ধব কর্মসূচীর চাল জব্দ করা হয়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে সেখানে উপস্থিত ব্যক্তিরা দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করে। এসময় দুই ব্যক্তিকে অনেক পরিশ্রমের পর আটক করতে সক্ষম হন ধুনট থানা পুলিশ।
এ ঘটনায় থানা পুলিশ বাদি হয়ে সরকারি খাদ্য বান্ধব কর্মসূচীর চাল ক্রয় করে কালোবাজারীর মাধ্যমে বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে রাখার দায়ে ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনে ২৫(১) ধারায় মামলা করেছে। ওই মামলায় চৌকিবাড়ি ইউনিয়নের ডিলারের স্বামী ও ইউপি সদস্য ফরহাদ হোসেনসহ ১০ জনকে আসামী করা হয়েছে।
এ ঘটনায় চৌকিবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ফরহাদ হোসেনের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।ধুনট থানার ওসি কৃপা সিন্ধু বালা বলেন, গোপন সংবাদের মাধ্যমে অভিযান চালিয়ে সরকারি চাল বোঝাই ভটভটি সহ দুই ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে।
মামলা দায়েরের পর মঙ্গলবার দুপুরের দিকে তাঁদের আদালতের মাধ্যমে বগুড়া জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। মামলার অন্যান্য আসামীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। এছাড়া ধুনট থানার তার সঙ্গীয় ফোর্স এধরনের অনৈতিক কর্মকান্ড প্রতিহত করতে সর্বদা সজাগ, জাগ্রত।