জিয়াউদ্দিন লিটন: স্টাফ রিপোর্টার:
বগুড়া জেলার শেরপুর উপজেলায় আনাচে-কানাচে ফার্মেসীগুলোতে বিক্রি হচ্ছে নিষিদ্ধ ট্যাপেন্টাডল গ্রুপ ও এমফিটামিন যুক্ত মাদক জাতীয় ঔষধ।
মদ গাঁজা ফেনসিডিল ইয়াবার পরে নেশার জগতে এখন নতুন নাম সংযোজন হয়েছে ব্যথানাশক ট্যাপেন্টাডল ও এমফিটামিন গ্রুপের ট্যাবলেট। এটা ট্যাবলেটগুলোর দাম কম হওয়ায় ইয়াবা ও ফেনসিডিল ব্যবহারকারীরা খুঁজে পেয়েছে সাধ্যের মধ্যে সর্বোচ্চ নেশা। এই ট্যাবলেটগুলো ইয়াাবা সেবীরা যেভাবে ইয়াবা সেবন করতো সেভাবে আর ফেনসিডিল সেবীরা ট্যাবলেটটি গুঁড়া করে কাশির সিরাপের সাথে মিশিয়ে সেবন করছে। বেশিরভাগ মাদকসেবীরা বর্তমানে বিভিন্ন কোম্পানির ট্যাপেন্টাডল এবং এমফিটামিন গ্রুপের ব্যথানাশক ট্যাবলেট এর উপরে নির্ভরশীল।
শেরপুর উপজেলার মুখোশধারী কিছু মাদক ব্যবসায়ীর নিয়ন্ত্রণে উপজেলার আনাচে-কানাচে গড়ে ওঠা অবৈধ ফার্মেসি এই ব্যথানাশক মাদক জাতীয় ট্যাবলেট বিক্রির উপরই নির্ভরশীল।
বাংলাদেশের কয়েকটি ঔষধ কোম্পানি বিভিন্ন নামে এই ট্যাবলেট উৎপাদন করে থাকে। কোম্পানিভেদে একেকটি ট্যাবলেটের দাম ১২ থেকে ৩০ টাকা মাত্র। সাধ্যের মধ্যে যুব সমাজের নেশার স্বপ্ন পূরণে বেছে নিয়েছে নিষিদ্ধ ঘোষিত এই ট্যাবলেটগুলো। তবে ফার্মেসির মালিকরা বিশেষ পদ্ধতিতে এই ওষুধগুলো প্রতিটি ১০০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি করে আসছে। খোঁজ নিয়ে দেখা যায় ধুনট রোড তালতলা, নবমী সিনেমাহল, বাসস্ট্যান্ড, রেজিস্ট্রি অফিস এলাকার কিছু ফার্মেসীতে লোপেন্টা (এসিআই), টাপেন্টা (এসকেইফ), সিনটা (হেল্থকেয়ার), টেপিক্সিয়া (গ্লোব), পেন্টাডল (স্কয়ার), সেন্ট্রাডল (ইনসেপ্টা), টোপিটা (বেক্সিমকো) ঔষধ গুলো বিশেষ পদ্ধতিতে বিক্রি করা হচ্ছে। ৫০ থেকে ১০০ মিলিগ্রামের নিষিদ্ধ ঘোষিত এই ওষুধগুলো মাদকসেবনকারীরা তাদের মাত্রা অনুযায়ী সেবন করে থাকে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, বর্তমানে কিশোর, যুবক, অপ্রাপ্তবয়স্ক সব মাদকসেবীরা এই ট্যাবলেট নিতে আসলেও কিশোর ও যুবকের সংখ্যাই বেশি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক যুবক বলেন ইত:পূর্বে ফার্মেসিতে গেলেই সহজে পাওয়া যেত কিন্তু এখন অপরিচিত কাউকে দেয় না। যদিও দেয় তবে নিয়মিত মাদকসেবীর ফোনের মাধ্যমে পরিচিত করিয়ে তারপর।
এ প্রসঙ্গে বগুড়া মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ মেহেদী হাসান জানান, সম্প্রতি এ বিষয়ে আমাদের আলোচনা হয়েছে, বর্তমানে ১০ টি কোম্পানী এই ব্যথানাশক ট্যাবলেট উৎপাদন অনুমোদন পেয়েছে যা কোন ফার্মেসিতে বিক্রিযোগ্য নয়। শুধুমাত্র মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর থেকে লাইসেন্সপ্রাপ্ত হসপিটাল প্রাইভেট ক্লিনিক গুলো বিক্রি করতে পারবে যেখানে অপারেশন এর কাজে এই ঔষধ ব্যবহৃত হবে। তবে আমরা বর্তমানে জেলা ও উপজেলার বিভিন্নস্থানে অবৈধভাবে এই ঔষধ বিক্রি তথ্য পাচ্ছি এবং মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে দমনের চেষ্টা করছি।