ইমরান ইসলাম,নিয়ামতপুর(নওগাঁ)প্রতিনিধিঃ ভাদ্র এলেই নওগাঁর নিয়ামতপুরে গ্রামে গ্রামে জমে ওঠে তালের পিঠা খাওয়ার উৎসব। বাঙালি রসনার অন্যতম অনুষঙ্গ পিঠার কদর এখনও কমেনি।
ভাদ্র-আশ্বিন মাসে সুস্বাদু তালের তৈরিতে ব্যস্ত গৃহিণীদেরও দেখা মেলে গ্রাম-বাংলার প্রত্যন্ত জনপদে। তবে সময়ের সাথে সাথে চিত্র কিছুটা বদলে গেছে। ঋতুবৈচিত্র্যের ধারাবাহিকতায় এখন শরৎকাল। ঝোঁপঝাঁড়ে কাঁশফুল আর আকাশে তুলোর মতন সাঁদা মেঘের ভেলা জানান দিচ্ছে শরতের।
একই ভাবে আবহমান গ্রাম বাংলার পুকুরপাড়ে এক পায়ে দাঁড়ানো তালগাছটি থেকে পাকা তালের মৌ মৌ গন্ধ মেঠোপথের পথিকের নাকে এসে জানান দিচ্ছে ভাদ্র ও আশ্বিন মাস । তালের রসে পিঠা তৈরির সর্বোৎকৃষ্ট সময়। কালের পরিক্রমায় সুস্বাদু তাল পাওয়া গেলেও পিঠাপ্রেমী বাঙালির রসানাবিলাসে ভাটার টান লেগেছে। দু-দশক আগে গ্রামগঞ্জের হাট বাজারে তাল বিক্রি করে অনেকে সংসার চালিয়েছেন। কিন্তু আজ কালের আর্বতনে গ্রামীন হাট বাজারে তালের দেখা মেলে না।

কিছু কিছু বাজারে তাল নিয়ে বিক্রির করার জন্য বসে রয়েছে বিক্রিতা দেখা মেলে না ক্রেতার। পিঠাপ্রেমীরা জানান, কেবল তালের রস দিয়ে তো আর পিঠা হয় না। এর সাথে বিভিন্ন চালের গুঁড়া, আখের গুড়,চিনি,কলা, নারিকেলসহ সব উপকরণের দাম বেশি হওয়ায় পিঠা তৈরিতে এখন অনেক খরচ পড়ছে। তাই বাচ্চাদেরও বায়না পূরণ করা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। বছরে একবার তালের পিঠা খাওয়ার সুযোগ মিলে।
তাই বাচ্চাদের বায়না পূরণে বাড়তি দামে ঐ সব কিনতে হচ্ছে। তালের রসে প্রচুর পরিমাণ শর্করা ও একাধিক ভিটামিনের উপস্থিতি রয়েছে। যা মানবদেহের জন্য খুবই উপকারী। তবে তালের রস সংগ্রহ ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে জীবাণুমুক্ত ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে হবে ।
এদিকে নিয়ামতপুরের প্রতিটি গ্রামে তাল পিঠা বানানোর ধুম পড়েছে। জানা গেছে, মেয়ে বিবাহ দিলে শ্বাশুর বাড়ীতে মুরব্বিদের নিয়ম অনুযায়ী বছরে একবার হলেও তাল পিঠা দিতে হয়। এক গৃহিনী জানান, তাল পিঠা অনেক মজার পিঠা হলেও বানাতে অনেক পরিশ্রম করতে হয়। তাল পিঠা বানাতে ত্রিশ মিনিট রস ভাপে রাখতে হয়।
তিনি আরোও জানান, মেয়েকে বিবাহের পর মুরব্বিদের নিয়ম অনুযায়ী বছরে একবার অন্যান্য ফল-মূলের সাথে তাল পিঠা দিতে হয়। এই নিয়ম শহরে না থাকলেও গ্রামগঞ্জে এখনও প্রচলিত রয়েছে।