ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি : জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা
ধর্ষক ইব্রাহীম খাঁনের বিচারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে ওই
উপজেলার বীরহলী মানিক পোখর গ্রামের শহীদ ডাঃ মনির উদ্দিন
চৌধুরী’র পরিবার।
বৃহস্পতিবার (১২ আগষ্ট) দুপুরে ঠাকুরগাঁও রিপোর্টার্স ইউনিটি’র কার্যালয়ে সাংবাদিকদের কাছে এ সব অভিযোগ তুলে ধরেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন শহীদ পরিবারের সদস্য রোকেয়া বেগম,
মসলিম উদ্দিন, মুক্তিযোদ্ধা জিতেন্দ্র নাথ, ইসলাম উদ্দিন, কফিল উদ্দিন
প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে শহীদ পরিবারের পক্ষে সামসউদ্দিন চৌধুরী বলেন,
ইব্রাহীম খাঁন একজন রাজাকার। সে ১৯৭১ সালে আমার বোন
সুফিয়া বেগমকে গণধর্ষন করে নৃশংসভাবে হত্যা করে।
এছাড়া টাকার বিনিময়ে মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় অন্তভুক্ত হয়ে জেলার পীরগঞ্জ
উপজেলায় প্রভাব খাটিয়ে বিভিন্ন ধরের অপকর্ম চালিয়ে আসছেন।
তিনি একাধিক ব্যক্তির কাছে মোটা অংঙ্কের টাকা নিয়ে মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় অন্তভুক্ত করেছেন। তার এসব অপকর্মের বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় তার বেতন ভাতাদি বন্ধ করে দেয়। এ বিষয়ে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে মামলা চলমান রয়েছে।
তিনি আরও বলেন মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় যাচাই বাছাই করে ডাঃ মনির
উদ্দিন চৌধুরিকে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও তার কন্যা সুফিয়া বেগমকে
বিরঙ্গনা স্বীকৃতি দিলে রাষ্ট্র এবং সমাজে হেয় প্রতিপন্ন করতে
গত ৩১ শে জুলাই পীরগঞ্জে একটি অনুষ্ঠানে মানহানিকর বক্তব্য দেন।
এর পর ইব্রাহীম বাহিনী শহীদ পরিবারের সদস্যদের হত্যার হুমকি দিয়ে
আসছে। তার বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে তার বিরুদ্ধে
আইনি ব্যবস্থা নিতে সরকারের প্রতি জোর দাবি করেন।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলার বাদি রকেয়া বেগম
জানান ইব্রাহিম বাহিনীর নির্যাতনে আজ আমি পঙ্গু। শেষ বয়সে
তার বিচার দেখে যেতে না পারলে আত্মা শান্তি পাবে না।
এখন পর্যন্ত মামলাটি তৃতীয় দফা তদন্তে সত্যতা পাওয়ায় আদালতের নির্দেশে ভুয়া
মুক্তিযোদ্ধা ইব্রাহীম খাঁনের বেতন ভাতাসহ সকল সুযোগ সুবিধা বন্ধ করে দিয়েছে। এখন বিচারের অপেক্ষায় দিন গুনছি।
এই ঘটনার প্রত্যক্ষ স্বাক্ষী পীরগঞ্জ উপজেলার বীরহলী মানিক পোখর
গ্রামের আতাউর রহমান কেঁদে কেঁদে বলেন ৭১ সালে ওই ইব্রাহীম
খান শহীদ ডা: মনির উদ্দীনকে তুলে নিয়ে গিয়ে নৃশংস ভাব হত্যা করে
এবং তার মেয়েকে ধর্ষণের পর হত্যা করে। যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ইসলাম
উদ্দীনও কেঁদে কেঁদে বলেন ইব্রাহীম খান এতোই খারাপ প্রকৃতির
মানুষ যা প্রকাশের ভাষা আমার জানা নেই।
তিনি আরও বলেন এই ধর্ষক বিজয় দিবসের একটি কর্মসূচীতে সকলের সামনে আমার ভাতের প্লেট পর্যন্ত কেড়ে নেয়। যা আজও পর্যন্ত আমাকে ডুকরে ডুকরে কাঁদায়।
মুক্তিযোদ্ধা কফিল উদ্দীন বলেন ইব্রাহীম খান খুবই খারাপ প্রকৃতির মানুষ, তিনি কি ভাবে মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় নাম লিখিয়েছেন বিষয়টি আমার বোধগম্য নয়। একই কথা বলেন মুক্তিযোদ্ধা জীতেন্দ্র নাথ, খয়রাত আলীসহ অনেকে।