ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি: জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় বাণিজ্যিক ভাবে উৎপাদন হচ্ছে জৈব সার কেঁচোকম্পোষ্ট। স্থানীয় বাজার ও পাশের জেলাগুলোতে এ সারের প্রচুর চাহিদা থাকায় প্রান্তিক কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে কেঁচো সার উৎপাদনে। আর সাথে যুক্ত হয়েছেন ২ শতাধিক কৃষক।
উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানাযায়, কেঁচোর বিষ্ঠা বা মল উৎকৃষ্ট জৈব সার। এর বৈজ্ঞানিক নাম ভার্মি কম্পোস্ট। এটি এলাকার কৃষকের কাছে কেঁচো সার হিসেবে পরিচিত। বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় ২০১৭ সালে ২০টি কংক্রিটের রিং বা চাকতির মধ্যে কেঁচো সার উৎপাদন শুরু করেনর্ তপন মাহামুদ। তাঁর এই কেঁচো সার উৎপাদন দেখে উপজেলায় প্রায় ২’শ কৃষক বাণিজ্যিক ভাবে এ সার উৎপাদন করছেন।
৩ বছর আগে দুওসুও ইউনিয়নের মহিষমারী গ্রামের হারুন উপজেলা কৃষি অফিস থেকে ১টি কংক্রিটের রিং ও ১ কেজি কেঁচো কিনে কেঁচো সার উৎপাদন শুরু করেছিলেন। বর্তমানে তিনি ৮০টি কংক্রিটের রিংয়ে কেঁচো সার উৎপাদন করছেন নিয়মিত। তিনি জানান, গত ৩ বছরে ৩০ টন কেঁচো সার বিক্রি করেছেন। যার আনুমানিক মূল্য চার লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা।
জানা গেছে, শাকসবজির ফেলে দেওয়া অংশ, অর্ধপচা গোবর, কলাগাছ ও কচুরিপানা একসঙ্গে মিশিয়ে সেখানে কেঁচো ছেড়ে দেওয়া হয়। কেঁচো এসব ময়লা খেয়ে মল ত্যাগ করে পচিয়ে ফেলে ও বংশ বৃদ্ধি করে। এই ময়লা জৈব সার হিসেবে প্রতি কেজি ১৫-২০ টাকা দরে বিক্রি করা হয়। আর প্রতি কেজি কেঁচো ৩ হাজার টাকা দামে বেচাকেনা হচ্ছে।
কৃষি অফিসের প্রযুক্তিগত সহযোগিতায় নিজ উদ্যোগে স্থানীয় প্রবীণ সাংবাদিক হারুন অর রশিদ এ বছর ১২০টি কংক্রিটের রিং স্থাপন করে কেঁচো সার উৎপাদন শুরু করেছেন। তিনি জানান, এক মাস পরেই এলাকায় শীতকালীন সবজি উৎপাদন শুরু হবে। সবজিতে কেঁচো সারের প্রচুর চাহিদা। ৩ টন সার স্টক রয়েছে। এক মাসের মধ্যে আরও ১ টন সার জমা হবে।
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা তপন মাহামুদ জানান, কৃষকরা কেঁচো সার উৎপাদন করতে চাইলে আমরা প্রযুক্তিগত সহায়তার পাশাপাশি প্রশিক্ষণ প্রদানের ব্যবস্থা রয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি কৃষক নিজ উৎপাদিত সার ফসলে ব্যবহার করুক।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুবোধ চন্দ্র রায় জানান, বিষমুক্ত সবজি উৎপাদনে কেঁচো সারের বিকল্প নেই। জৈবিক পদ্ধতিতে উপজেলায় এখন ব্যাপক সবজি চাষ হয়। আর এই সার ব্যবহার করলে মাটির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধি হয়।